প্রতিষ্ঠাতার পরিচিতি

তোফায়েল আহমেদ (জন্ম: ২২ অক্টোবর, ১৯৪৩) একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ।। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা। ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জুন তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তিনি পাঁচ দফা জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের একজন সদস্য এবং শিল্প মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি।

জীবন ও শিক্ষা

তোফায়েল আহমেদের জন্ম ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের ২২ অক্টোবর ভোলার কোড়ালিয়া গ্রামে। পিতা মৌলভী আজহার আলী, মা ফাতেমা খানম। ১৯৬০ সালে ভোলা সরকারি হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে ১৯৬২ সালে আইএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে এমএসসি। ১৯৬৪ সালে দনিয়াস্থ আলহাজ মফিজুল হক তালুকদারের জ্যেষ্ঠ কন্যা আনোয়ারা বেগমের সঙ্গে তিনি পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন।

রাজনৈতিক জীবন


১৯৬৬-৬৭ মেয়াদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের (বর্তমানে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) নির্বাচিত সহ-সভাপতি (ভিপি) ছিলেন। ১৯৬৮-৬৯-এ গণজাগরণ ও ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন তিনি ডাকসুর ভিপি হিসেবে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয় লাভ করেন। ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুজিব বাহিনীর অঞ্চল ভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত চার প্রধানের একজন ছিলেন।

তোফায়েল আহমেদ বঙ্গবন্ধুর সাথে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সফরে তাঁর সফরসঙ্গী হন। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ভারত, সোভিয়েত ইউনিয়ন, অটোয়াতে কমনওয়েলথ সম্মেলন, লাহোরে অনুষ্ঠিত ওআইসি সম্মেলন, আলজেরিয়ায় অনুষ্ঠিত জোটনিরপেক্ষ সম্মেলন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন। এছাড়া, সাবেক যুগোশ্লাভিয়া, ইরাক এবং জ্যামাইকায় অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ সম্মেলনেও তিনি যোগদান করেন।

রাষ্ট্র পরিচালনায় ভূমিকা


বঙ্গবন্ধু ও তোফায়েল আহমেদ

১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ তারিখে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরবর্তীকালে ১৪ জানুয়ারি ১৯৭২ তারিখে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সচিবের দায়িত্ব লাভ করেন।১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির জনকের নির্মম হত্যাকাণ্ডের একই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর তোফায়েল আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়। দীর্ঘ তিন বছর তিনি কারান্তরালে ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোলা-১ ও ভোলা-২ আসন থেকে জয় লাভ করেন।

২০০৮-এর ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে ভোলা-২ আসন থেকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। সুষ্ঠু, অবাধ ও সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে গঠিত অন্তবর্তীকালীন মন্ত্রিসভায় যোগদানের আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নির্দেশনায় মহাজোট সরকারের আমলে দেশের শিল্পখাত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করে। ১৮ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে তিনি নির্বাচনকালীন সরকারের মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। ২১ নভেম্বর ২০১৩ তারিখে পুনঃবণ্টনকৃত মন্ত্রিপরিষদে তিনি শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোলা -১ হতে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১২ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন এবং ১৩ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।


-